ইসলাম নারী ও পুরুষ—উভয়ের প্রতি সমানভাবে দায়িত্ব আরোপ করেছে এবং সমানভাবে প্রতিদান ঘোষণা করেছে। পবিত্র কুরআনে বহু জায়গায় এই ন্যায়ের ঘোষণা এসেছে, যার একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত হলো সূরা আহযাবের ৩৫ নম্বর আয়াত, যা শুরু হয় এই বাক্য দিয়ে: ( ইন্নাল মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাতি)
“إِنَّ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ” — ‘নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ এবং মুসলিম নারী’…”
এই আয়াতটি শুধু একটি সাধারণ তালিকা নয়; বরং এটি ইসলামে নারী-পুরুষের আধ্যাত্মিক মর্যাদার সমতা, দীন পালনে দায়বদ্ধতা, এবং আল্লাহর নিকট প্রতিদান লাভের সাম্যতার এক জ্বলন্ত সাক্ষ্য।
📖 ইন্নাল মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাতি বাংলা উচ্চারণ
إِنَّ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ، وَالْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ، وَالْقَانِتِينَ وَالْقَانِتَاتِ، وَالصَّادِقِينَ وَالصَّادِقَاتِ، وَالصَّابِرِينَ وَالصَّابِرَاتِ، وَالْخَاشِعِينَ وَالْخَاشِعَاتِ، وَالْمُتَصَدِّقِينَ وَالْمُتَصَدِّقَاتِ، وَالصَّائِمِينَ وَالصَّائِمَاتِ، وَالْحَافِظِينَ فُرُوجَهُمْ وَالْحَافِظَاتِ، وَالذَّاكِرِينَ اللَّهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتِ، أَعَدَّ اللَّهُ لَهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا
বাংলা উচ্চারণ : ইন্নাল মুসলিমীনা ওয়াল মুসলিমাতি, ওয়াল মু’মিনীনা ওয়াল মু’মিনাতি, ওয়াল ক্বানিতীনা ওয়াল ক্বানিতাতি, ওয়াস্সাদিকীনা ওয়াস্সাদিকাতি, ওয়াস্সাবিরীনা ওয়াস্সাবিরাতি, ওয়াল খাশি’ঈনা ওয়াল খাশি’আতি, ওয়াল মুতাসাদ্দিকীনা ওয়াল মুতাসাদ্দিকাতি, ওয়াস্সায়িমীনা ওয়াস্সায়িমাতি, ওয়াল হাফিজীনা ফুরূজাহুম ওয়াল হাফিজাতি, ওয়াজ্যাকিরীনাল্লাহা কাসীরাও ওয়াজ্যাকিরাতি — আ’আদ্দাল্লাহু লাহুম মাগফিরাতাঁও ওয়া আজরান আযিমা।
🔹 সূরা আল-আহযাব – আয়াত ৩৫
বাংলা অনুবাদ: “নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী, মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, রোজাদার পুরুষ ও রোজাদার নারী, যারা নিজেদের লজ্জাস্থান হেফাজত করে এমন পুরুষ ও নারী, এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী—আল্লাহ তাঁদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা এবং মহাপুরস্কার।”
🧠 শব্দ বিশ্লেষণ
- الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ – যারা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। ইসলামের মৌলিক পরিচয় বহনকারী।
- الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ – বিশ্বাসে পরিপূর্ণ মুমিন। অন্তরের গভীরতা থেকে বিশ্বাস স্থাপনকারী।
- الْقَانِتِينَ وَالْقَانِتَاتِ – পূর্ণ আনুগত্যশীল ও বাধ্যগত।
- الصَّادِقِينَ وَالصَّادِقَاتِ – সত্যবাদী, যাদের কথা ও কাজে মিথ্যার লেশ নেই।
- الصَّابِرِينَ وَالصَّابِرَاتِ – ধৈর্যশীল, বিপদেও ধৈর্য ধারণকারী।
- الْخَاشِعِينَ وَالْخَاشِعَاتِ – বিনয়ী ও নম্র, আল্লাহর সামনে নিজেকে তুচ্ছ মনে করা।
- الْمُتَصَدِّقِينَ وَالْمُتَصَدِّقَاتِ – দানশীল, যারা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে।
- الصَّائِمِينَ وَالصَّائِمَاتِ – যারা রোজা রাখে।
- الْحَافِظِينَ فُرُوجَهُمْ وَالْحَافِظَاتِ – যারা নিজের যৌনতা সংযত রাখে।
- الذَّاكِرِينَ اللَّهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتِ – যারা আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।
🌟 আয়াতের মর্মবাণী
এই আয়াত নারী ও পুরুষ—উভয়ের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে বুঝিয়ে দেয় যে, আল্লাহর দৃষ্টিতে পুণ্যের মাপকাঠি হলো আন্তরিকতা ও কর্ম, লিঙ্গ নয়।
এটি সেইসব যুগ ও সমাজের গোঁড়ামির বিরুদ্ধে একটি যুগান্তকারী বার্তা—যেখানে নারীদেরকে ধর্মীয়ভাবে নিচু মনে করা হতো।
আল্লাহ এখানকার প্রতিটি গুণাবলি দুইবার করে উল্লেখ করেছেন—প্রথমে পুরুষ, তারপর নারী—যাতে কেউ না ভাবে যে নারীর অবস্থান কোনোভাবে কম।
📌 আমাদের জীবনে শিক্ষা
- লিঙ্গ নয়, গুণই আসল: পুরুষ-নারী যারাই হোক না কেন, ঈমান ও আমলের গুণেই তারা আল্লাহর কাছে সম্মানিত।
- নারীদের ধর্মীয় মর্যাদা: ইসলাম নারীদের অবমূল্যায়ন করেনি বরং তাদের পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছে।
- গুণ অর্জনের তালিকা: এই আয়াতে ১০টি গুণাবলি রয়েছে, যা এক একজন মুসলিমের নৈতিক মানচিত্র।
- জীবনের উদ্দেশ্য নির্ধারণ: এই আয়াত আমাদের শেখায়, কীভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনকারী হতে হয়।
🎁 আয়াতের পুরস্কার
أَعَدَّ اللَّهُ لَهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا
— “আল্লাহ তাঁদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা এবং মহাপুরস্কার।”
👉 অর্থাৎ, যারা এই গুণগুলোর অধিকারী হবে, আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন এবং দান করবেন মহান পুরস্কার—জান্নাত।
১০টি গুণাবলির ওপর আলাদা হালকা আলোচনা
অবশ্যই! সূরা আল-আহযাব (৩৩:৩৫) আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা নারী ও পুরুষের জন্য যে ১০টি গুণাবলি উল্লেখ করেছেন, সেগুলোর প্রতিটির ওপর নিচে হালকাভাবে আলোচনা করা হলো। এতে পাঠক বুঝতে পারবেন—কেন এগুলো গুরুত্বপূর্ণ এবং বাস্তব জীবনে কীভাবে এগুলো চর্চা করা যায়।
🌙 ১. মুসলিম পুরুষ ও নারী
“الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ”
👉 যারা মুখে ইসলামের স্বীকৃতি দেয় এবং বাহ্যিকভাবে ইসলামী কার্যাবলিতে নিজেকে যুক্ত রাখে।
📌 বাস্তব প্রয়োগ: নামাজ, রোযা, হালাল খাবার, পোশাক ইত্যাদি।
💖 ২. মুমিন পুরুষ ও নারী
“وَالْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ”
👉 যাদের অন্তরে ঈমান আছে—আল্লাহ, ফেরেশতা, কিতাব, নবী, পরকালের প্রতি অটুট বিশ্বাস।
📌 বাস্তব প্রয়োগ: গোপনে আল্লাহকে ভয় করা, তাকওয়া অর্জনের চেষ্টা।
🧎♂️ ৩. অনুগত পুরুষ ও নারী
“وَالْقَانِتِينَ وَالْقَانِتَاتِ”
👉 যারা বিনয়ী ও বিনীতভাবে আল্লাহর হুকুম পালন করে।
📌 বাস্তব প্রয়োগ: সালাতে মনোযোগ, গর্ববিহীন আমল।
🗣️ ৪. সত্যবাদী পুরুষ ও নারী
“وَالصَّادِقِينَ وَالصَّادِقَاتِ”
👉 যারা কথায় ও কাজে সত্যবাদিতা বজায় রাখে।
📌 বাস্তব প্রয়োগ: ব্যবসা-বাণিজ্যে ধোঁকাবাজি না করা, প্রতিশ্রুতি রক্ষা।
🕰️ ৫. ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী
“وَالصَّابِرِينَ وَالصَّابِرَاتِ”
👉 যারা বিপদ, দুঃখ ও গুনাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে ধৈর্য ধারণ করে।
📌 বাস্তব প্রয়োগ: পরীক্ষা, দুঃখ, কষ্টে আল্লাহর প্রতি অভিযোগ না করে সবর করা।
😔 ৬. খুশু-খুজু রাখে এমন পুরুষ ও নারী
“وَالْخَاشِعِينَ وَالْخَاشِعَاتِ”
👉 যাদের অন্তর আল্লাহর সামনে নরম ও বিনম্র থাকে।
📌 বাস্তব প্রয়োগ: সালাতে মনোযোগ, চোখ-কান-পা নিয়ন্ত্রণ।
💸 ৭. দানশীল পুরুষ ও নারী
“وَالْمُتَصَدِّقِينَ وَالْمُتَصَدِّقَاتِ”
👉 যারা গোপনে ও প্রকাশ্যে আল্লাহর রাস্তায় সম্পদ ব্যয় করে।
📌 বাস্তব প্রয়োগ: গরিব আত্মীয়কে সাহায্য, গোপনে সদকা।
🌙 ৮. রোজাদার পুরুষ ও নারী
“وَالصَّائِمِينَ وَالصَّائِمَاتِ”
👉 যারা শুধু রমাদান নয়, বরাবরই সিয়াম পালন করে।
📌 বাস্তব প্রয়োগ: প্রতি সোমবার-বৃহস্পতিবার নফল রোযা, ১৩-১৪-১৫ তারিখের রোযা।
🛡️ ৯. যারা নিজেদের গোপন অঙ্গ হেফাজত করে
“وَالْحَافِظِينَ فُرُوجَهُمْ وَالْحَافِظَاتِ”
👉 যারা ব্যভিচার, জিনা, পর্নোগ্রাফি, অশ্লীলতা থেকে নিজেকে রক্ষা করে।
📌 বাস্তব প্রয়োগ: দৃষ্টি সংযম, পর্দা রক্ষা, বিয়েকে সহজ করা।
🕋 ১০. যারা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে
“وَالذَّاكِرِينَ اللَّهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتِ”
👉 যারা দিন-রাত আল্লাহর যিকির করে, অন্তরে তাঁর ভয় বয়ে বেড়ায়।
📌 বাস্তব প্রয়োগ: সকাল-সন্ধ্যার যিকির, দুঃখ-কষ্টে আল্লাহর নাম স্মরণ।
নারীবাদ ও আধুনিক সমাজে “ইন্নাল মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাতি” আয়াতের প্রাসঙ্গিকতা
আজকের আধুনিক সমাজে নারীবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে, যেখানে নারী অধিকারের প্রসারে সারা বিশ্বে বিভিন্ন আন্দোলন চলছে। ইসলাম নারীর মর্যাদা এবং অধিকার নিয়ে যেভাবে স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছে, তার সঠিক ব্যাখ্যা ও বাস্তব প্রয়োগ সমাজে নারীর স্থান এবং মূল্য পুনঃনির্ধারণে সহায়তা করতে পারে। “ইন্নাল মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাতি” আয়াতটি সেই দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
১. ইসলামের নারীাধিকার
এই আয়াতে আল্লাহ মুসলিম পুরুষ ও নারীদের জন্য সমান সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন। এটি পরিপূর্ণভাবে নারীবাদী আন্দোলনের মূল বিষয়গুলির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, যেখানে নারীকে পুরুষের সমান অধিকার ও সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়।
👉 নারীবাদের মূল দাবি: নারী ও পুরুষের সমান অধিকার, সুযোগ, এবং মর্যাদা।
ইসলামের অবস্থান: ইসলাম নারীদের সমান অধিকার, সম্মান এবং মর্যাদা দিয়েছে। যদিও আল্লাহ পুরুষ ও নারীর ভূমিকা আলাদা রেখেছেন (যেমন, স্ত্রীর দায়িত্বের মধ্যে গৃহস্থালী, সন্তান পালন ইত্যাদি), তবে আধ্যাত্মিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক দায়িত্বে তাদের সমান মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
২. মুসলিম পুরুষ ও নারীর গুণাবলী
এই আয়াতে ১০টি গুণাবলি, যেমন সাদিকীনা (সত্যবাদী), ক্বানিতীনা (অনুগত), সায়িমীনা (রোজাদার), মুতাসাদ্দিকীনা (দানশীল) ইত্যাদি উল্লিখিত, যা পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য প্রযোজ্য। এতে বোঝানো হচ্ছে, নারীরা ইসলামের সব গুণাবলি অর্জনে পুরুষের সমান অংশীদার। এই গুণাবলির মধ্যে ঈমান, সত্যবাদিতা, ধৈর্য, দানশীলতা, আনুগত্য ইত্যাদি সমাজে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখার জন্য নারীকে সক্ষম ও সমর্থ করে তোলে।
👉 নারীবাদের মূল দাবি: নারীরা সবার মতো পারফর্ম করতে সক্ষম, তাদের কোনো কিছুর জন্য কম যোগ্য হওয়া উচিত নয়।
ইসলামের অবস্থান: ইসলাম নারীদেরকে সমান সুযোগ দিয়ে তাদের পারফরম্যান্সের মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখার অধিকার দিয়েছে। নারী যে কোনো ভালো কাজ ও উন্নতির পথ অনুসরণ করতে পারেন, এবং তাদেরও পুরুষের মতো পুরস্কৃত হওয়ার অধিকার রয়েছে।
৩. সামাজিক ভূমিকা
এই আয়াতের মাধ্যমে ইসলামে নারীদের সামাজিক ভূমিকা স্পষ্ট করা হয়েছে। ইসলাম নারীদের পরিবার ও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য উৎসাহিত করেছে। পরিবারে মায়েদের ভূমিকা ও নারীদের দায়িত্বের দিকে আলোকপাত করা হলেও, পাশাপাশি ইসলামে নারীদের দানশীলতা, সেবামূলক কাজ, শিক্ষা ও নেতৃত্বের ক্ষেত্রেও মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
👉 নারীবাদের মূল দাবি: নারীদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার, এবং তাদের কাজের মূল্যায়ন করা।
ইসলামের অবস্থান: ইসলামে নারী শুধু গৃহস্থালী বা পরিবার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়, বরং ধর্মীয় ও সামাজিক দায়িত্বেও পূর্ণ সমর্থন প্রদান করা হয়েছে। বিশেষ করে, শিক্ষা, ব্যবসা, দান, নেতৃত্বে নারীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪. আধুনিক নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি এবং ইসলামী নারীবাদ:
বর্তমান সমাজে নারীবাদী আন্দোলন নারীর স্বাধীনতা, সমান সুযোগ, এবং মর্যাদার দাবিতে সক্রিয় রয়েছে। তবে, কখনও কখনও নারীবাদী আন্দোলন ইসলামের কিছু নির্দেশনার সঙ্গে বিরোধিতা করে, যেমন পোশাক, পরিবারে ভূমিকা ইত্যাদি। এখানে ইসলামী নারীবাদ একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপট তৈরি করে, যেখানে ইসলাম নারীর স্বাধীনতা, মর্যাদা এবং তার কর্মক্ষেত্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে, তবে সেটা বিশেষ আল্লাহর বিধান ও সতর্কতার মধ্যে রেখেছে (যেমন পর্দা, সতীত্ব, পরিবার প্রতিষ্ঠা)।
👉 নারীবাদের মূল দাবি: নারীর শারীরিক ও মানসিক স্বাধীনতা, এবং কোনো কিছুতে তাদের সীমাবদ্ধ না করা।
ইসলামের অবস্থান: ইসলামে নারীর স্বাধীনতা রয়েছে, তবে তা সঠিক বিধান ও সম্মানের মধ্যে থাকতে হবে। ইসলাম নারীর পবিত্রতা এবং শুদ্ধতা রক্ষা করে, তাকে পরিবার ও সমাজে সঠিকভাবে অবদান রাখার সুযোগ দেয়।
৫. মাগফিরাত ও আজরান আযিমা
আয়াতের শেষে আল্লাহ যে পুরস্কার দিয়েছেন, তা নারীর মর্যাদাকে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করে। মাগফিরাত (ক্ষমা) এবং আজরান আযিমা (মহান পুরস্কার) একটি স্পষ্ট প্রমাণ যে, নারী-পুরুষ উভয়ই আল্লাহর কাছে সমান মর্যাদা ও পুরস্কারের অধিকারী।
👉 নারীবাদের মূল দাবি: নারীদেরও সমান সুযোগ দেওয়া উচিত যাতে তারা নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী পুরস্কৃত হয়।
ইসলামের অবস্থান: ইসলাম নারীদের আধ্যাত্মিক পুরস্কারে পুরুষের সমান অধিকার দিয়েছে, এবং এটি নারীদের ঈমান ও আমলের শক্তি বৃদ্ধির জন্য এক অনুপ্রেরণা।
🖋️ উপসংহার
“إِنَّ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ” এই আয়াত আমাদের চেতনায় নতুন করে মনে করিয়ে দেয়—ইসলামে পুরুষ ও নারীর মধ্যে আধ্যাত্মিক মর্যাদায় কোনো বৈষম্য নেই। প্রতিটি মুসলিমের উচিত, এই আয়াতের আলোকে নিজেকে গড়ে তোলা এবং উভয় লিঙ্গের মর্যাদা ও দায়িত্ব সমানভাবে বোঝা।
আসুন, আমরা পুরুষ-নারী নির্বিশেষে এই আয়াতে বর্ণিত ১০টি গুণ অর্জনের চেষ্টা করি—তাহলেই আমরা হবো আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভকারী বান্দা।