নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন । ধৈর্য নিয়ে বিস্তারিত

Share this post

মানবজীবন পরীক্ষার ময়দান। সুখ-দুঃখ, লাভ-ক্ষতি, রোগ-শোক—এসবই আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য পরীক্ষা। এই পরীক্ষার মুহূর্তে যে গুণটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তা হলো সবর বা ধৈর্য। কুরআনে আল্লাহ তাআলা একাধিক স্থানে ধৈর্যের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে একটি মহান প্রতিশ্রুতি হলো— নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” (সূরা বাকারা: ১৫৩)

এই আয়াত শুধু একটি উপদেশ নয়; বরং এটি ঈমানদারদের জন্য আশার আলো, সান্ত্বনা ও দৃঢ়তার উৎস। জীবনের কঠিনতম সময়েও আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের মাধ্যম হলো ধৈর্য ধারণ করা। এই ব্লগপোস্টে আমরা আলোচনা করব ধৈর্যের প্রকৃত অর্থ, এর ফজিলত, এবং কীভাবে একজন মুমিন বাস্তব জীবনে ধৈর্যের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য লাভ করতে পারে।

“নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন” – আয়াতের বিশদ

📖 কুরআনের আয়াত

সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৫৩

আরবি:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ

বাংলা অনুবাদ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।”

বাংলা উচ্চারণ: Yā ayyuhallażīna āmanus-ta‘īnụ biṣ-ṣabri waṣ-ṣalāh, innallāha ma‘aṣ-ṣābirīn.

🕌 তাফসির (সংক্ষেপে)

  • আল্লাহর নির্দেশ: আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে জীবনের প্রতিটি সংকটে ধৈর্য ধারণ করতে এবং নামাজের মাধ্যমে তাঁর সাহায্য কামনা করতে বলেছেন।
  • সবরের গুরুত্ব: ‘সবর’ মানে হলো আল্লাহর হুকুম পালনে দৃঢ় থাকা, গুনাহ থেকে বিরত থাকা, আর বিপদের সময় ধৈর্য ধরা।
  • আল্লাহর সান্নিধ্য: আল্লাহ বলেছেন—“আমি ধৈর্যশীলদের সাথে আছি।” এর অর্থ হলো—তাঁদের জন্য বিশেষ সাহায্য, রহমত ও বিজয় রয়েছে। এটি এমন এক মর্যাদা, যা সব বান্দা পায় না।
  • তাফসিরে আলেমদের ব্যাখ্যা:
    • ইবন কাসীর: আল্লাহর সাথে থাকা মানে হলো তাঁর সাহায্য, দয়া ও বিজয় লাভ করা।
    • তাবারী: এই আয়াতে বোঝানো হয়েছে, মুমিনরা দুঃখ-কষ্টে ধৈর্য ধরে এবং নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাঁদের পাশে থাকেন।
    • কুরতুবী: এখানে নামাজ ও ধৈর্যকে একসাথে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ নামাজ ধৈর্যের অন্যতম সর্বোচ্চ রূপ।

🕌 ধৈর্যের (সবরের) প্রকারভেদ

ইসলামী শিক্ষায় সবর বা ধৈর্য মূলত তিন ভাগে বিভক্ত। আলেমগণ এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন:

আল্লাহর আনুগত্যে ধৈর্য

👉 অর্থাৎ, আল্লাহর ফরজ ইবাদত ও নির্দেশসমূহ নিয়মিতভাবে পালন করতে ধৈর্য ধারণ করা।

  • পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিত পড়া,
  • রমজানে রোজা রাখা,
  • যাকাত আদায় করা,
  • হজ্ব সম্পাদন করা ইত্যাদি কাজে ধৈর্য দরকার।
    কারণ: এসব ইবাদত নিয়মিতভাবে আদায় করা সবসময় সহজ হয় না, এতে কষ্ট ও সময় ব্যয় হয়।

গুনাহ থেকে বিরত থাকতে ধৈর্য

👉 অর্থাৎ, আল্লাহ যা হারাম করেছেন তা থেকে নিজেকে রক্ষা করা।

  • হারাম খাবার থেকে বিরত থাকা,
  • অবৈধ সম্পর্ক থেকে দূরে থাকা,
  • চুরি, সুদ, মিথ্যা, অপবাদ ইত্যাদি থেকে বাঁচা।
    কারণ: নফস ও শয়তান মানুষকে সবসময় গুনাহর দিকে টেনে নেয়। তাই এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ধৈর্য অপরিহার্য।

বিপদ-আপদে ধৈর্য

👉 অর্থাৎ, জীবনের দুঃখ-কষ্ট, রোগ-শোক, দারিদ্র্য, প্রিয়জনের মৃত্যু বা অন্য যে কোনো বিপর্যয়ের সময় আল্লাহর উপর ভরসা করে ধৈর্য ধারণ করা।
কারণ: কষ্টের সময় মানুষ ভেঙে পড়ে, অভিযোগ করে বা হারাম কাজে লিপ্ত হতে পারে। কিন্তু একজন মুমিন ধৈর্য ধরে আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করে।

✅ সংক্ষেপে:

  • ইবাদতে ধৈর্য
  • গুনাহ থেকে বাঁচতে ধৈর্য
  • বিপদে ধৈর্য

ধৈর্যের প্রকৃত অর্থ কী?

‘সবর’ শব্দটি আরবী صبر থেকে এসেছে, যার অর্থ হলো আটকে রাখা, সংযম করা, দৃঢ়ভাবে টিকে থাকা। ইসলামী পরিভাষায় সবর মানে হলো—আল্লাহর আনুগত্যে অটল থাকা, গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং বিপদে ধৈর্য ধরা।

📌 ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন:

“সবর হলো অন্তরের সেই দৃঢ়তা, যা মানুষকে আল্লাহর আনুগত্যে স্থির রাখে, হারাম থেকে বিরত রাখে এবং তাকদীরের বিপরীতে অভিযোগ করতে দেয় না।”

কুরআনে ধৈর্যের গুরুত্ব

কুরআনে প্রায় ৭০ বারের বেশি ধৈর্যের আলোচনা এসেছে। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের প্রতি বিশেষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কিছু উদাহরণ:

  • আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
    (হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।)
    — সূরা আল-বাকারা: ১৫৩
  • ধৈর্যশীলদের জন্য পুরস্কার সীমাহীন:
    إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُم بِغَيْرِ حِسَابٍ
    (ধৈর্যশীলদেরকে তাদের প্রতিদান অগণিতভাবে দেওয়া হবে।)
    — সূরা আয-যুমার: ১০
  • ধৈর্যশীলদের প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা:
    وَاللَّهُ يُحِبُّ الصَّابِرِينَ
    (আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন।)
    — সূরা আলে ইমরান: ১৪৬

হাদিসে ধৈর্যের ফজিলত

রাসূলুল্লাহ ﷺ ধৈর্যকে ঈমানের একটি মৌলিক অঙ্গ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

  • সবর ও ঈমানের সম্পর্ক: “সবর হলো ঈমানের অর্ধেক।” — (আবু নু’আইম, হিলিয়াতুল আওলিয়া, ১০/২৩১)
  • বিপদে ধৈর্য ধরার পুরস্কার: রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, “যখন কোনো মুমিনের ওপর দুঃখ-দুর্দশা, রোগ-শোক বা কষ্ট আসে, এমনকি একটি কাঁটা বিঁধলেও, আল্লাহ তা দ্বারা তার কিছু গুনাহ মাফ করে দেন।” — সহিহ বুখারি (৫৬৪১), সহিহ মুসলিম (২৫৭৩)
  • সবর ও জান্নাত: রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, “যার সন্তান মারা যায়, সে ধৈর্য ধারণ করলে আমি ও সে জান্নাতে এভাবে থাকব (দুই আঙুল মিলিয়ে দেখালেন)।” — সহিহ বুখারি (১২৯২), সহিহ মুসলিম (৯২১)

ধৈর্যশীলদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ প্রতিশ্রুতি

কুরআন ও হাদিসে আল্লাহ তাআলা ধৈর্যশীলদের জন্য অসংখ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর মধ্যে প্রধানগুলো হলো:

  • আল্লাহ তাদের সাথে আছেন:
    إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
    (নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।)
    — সূরা বাকারা: ১৫৩
  • সীমাহীন প্রতিদান:
    إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُم بِغَيْرِ حِسَابٍ
    (ধৈর্যশীলদেরকে তাদের প্রতিদান অগণিতভাবে দেওয়া হবে।)
    — সূরা আয-যুমার: ১০
  • আল্লাহর রহমত, দয়া ও হেদায়াত:
    وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
    أُو۟لَـٰٓئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَٰتٌ مِّن رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ ۖ وَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُهْتَدُونَ
    (যারা বিপদে পড়লে বলে—‘নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাবো।’ এদের উপর আছে তাদের রবের রহমত, দয়া এবং তারা হেদায়াতপ্রাপ্ত।) — সূরা বাকারা: ১৫৫-১৫৭

ধৈর্যের মাধ্যমে জীবনের পরীক্ষায় সফলতা

মানুষকে আল্লাহ দুনিয়াতে পরীক্ষা করেন—

  • দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দিয়ে,
  • রোগ-শোক দিয়ে,
  • প্রিয়জনের মৃত্যু দিয়ে,
  • কিংবা সম্পদ ও ক্ষমতার পরীক্ষায়।

আরো পড়ুন:

📌 কুরআনে এসেছে:

وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَىْءٍۢ مِّنَ ٱلْخَوْفِ وَٱلْجُوعِ وَنَقْصٍۢ مِّنَ ٱلْأَمْوَٰلِ وَٱلْأَنفُسِ وَٱلثَّمَرَٰتِ ۗ وَبَشِّرِ ٱلصَّـٰبِرِينَ

(আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, সম্পদ, জান-মাল ও ফল-ফসলের ক্ষতি দিয়ে। আর ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।) — সূরা বাকারা: ১৫৫

👉 এ আয়াত থেকে স্পষ্ট হয় যে, জীবনের পরীক্ষায় সফল হওয়ার উপায় হলো ধৈর্য ধারণ। ধৈর্যশীল মুমিন কষ্টকে আল্লাহর ইচ্ছা মনে করে মোকাবেলা করে এবং শেষ পর্যন্ত আল্লাহর সাহায্য লাভ করে।

সাহাবাদের জীবনে ধৈর্যের অনন্য দৃষ্টান্ত

ধৈর্যের বাস্তব নমুনা আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ ও তাঁর সাহাবাদের জীবনে পাই।

  • বিলাল (রা.): ইসলাম গ্রহণের কারণে তাঁকে মরুভূমির উত্তপ্ত বালিতে শুইয়ে পাথর চাপানো হয়েছিল। তবুও তিনি ধৈর্য ধরে বারবার বলতেন— “আহাদ, আহাদ” (এক আল্লাহ, এক আল্লাহ)।
  • খুবাইব ইবন আদী (রা.): কাফিররা তাঁকে বন্দি করে হত্যা করতে চেয়েছিল। মৃত্যুর মুখেও তিনি ধৈর্যের সাথে নামাজ পড়লেন এবং বললেন—
    “আমি আল্লাহর কাছে পরোয়া করি না আমি কোন দিকে মারা যাচ্ছি, যতক্ষণ আমি মুসলিম অবস্থায় মারা যাচ্ছি।”
  • উহুদ যুদ্ধ: যুদ্ধে বহু সাহাবি শহীদ হয়েছিলেন। কিন্তু বাকি সাহাবারা ধৈর্য ধারণ করে আবারও লড়াই চালিয়ে যান।

👉 সাহাবাদের এই ধৈর্যই ইসলামকে শক্তিশালী করেছে এবং আমাদের জন্য আদর্শ হিসেবে কুরআন-হাদিসে চিরস্থায়ীভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে।

দুঃখ-কষ্টে ধৈর্য ধরার উপকারিতা

মানুষের জীবন কষ্ট, রোগ-শোক, দুঃখ-দুর্দশা থেকে মুক্ত নয়। কিন্তু মুমিনের জন্য এগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা ও গুনাহ মোচনের মাধ্যম।

📌 রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন: “কোনো মুসলিমকে কষ্ট, দুঃখ, রোগ বা দুশ্চিন্তা আক্রান্ত করলে, এমনকি একটি কাঁটা বিঁধলেও, আল্লাহ তা দ্বারা তার কিছু গুনাহ মোচন করে দেন।” — সহিহ বুখারি (৫৬৪১), সহিহ মুসলিম (২৫৭৩)

👉 অর্থাৎ ধৈর্যশীল মুমিনের জন্য দুঃখ-কষ্ট আসলে গুনাহ মাফ, মর্যাদা বৃদ্ধি এবং জান্নাতের পথ প্রশস্ত হয়।

আল্লাহর সাহায্য লাভে ধৈর্যের ভূমিকা

ধৈর্য শুধু সহ্য করার নাম নয়; বরং আল্লাহর উপর ভরসা করে অটল থাকার নাম। কুরআনে আল্লাহ স্পষ্ট বলেছেন—

إِن تَصْبِرُوا وَتَتَّقُوا لَا يَضُرُّكُمْ كَيْدُهُمْ شَيْـًٔا ۗ

(তোমরা যদি ধৈর্য ধারণ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে তাদের ষড়যন্ত্র তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।) — সূরা আলে ইমরান: ১২০

👉 ইতিহাস সাক্ষী, প্রতিটি যুদ্ধে মুসলমানরা ধৈর্যের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য পেয়েছে। তাই ধৈর্য হলো বিজয়ের চাবিকাঠি।

কিভাবে দৈনন্দিন জীবনে ধৈর্য চর্চা করা যায়?

ধৈর্য চর্চা একদিনে সম্ভব নয়; বরং এটি অভ্যাস ও ইবাদতের মাধ্যমে অর্জিত হয়।

✅ কিছু বাস্তব উপায়:

  • নামাজে খুশু (মনোযোগ) আনার চেষ্টা করা।
  • কষ্টের সময় “ইন্না লিল্লাহি…” বলা।
  • রাগ এলে চুপ থাকা, অযু করা বা স্থান পরিবর্তন করা।
  • অল্পতে সন্তুষ্ট থাকা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
  • আল্লাহর ওয়াদা ও আখিরাতের কথা বেশি বেশি চিন্তা করা।

ধৈর্যহীনতার ক্ষতিকর দিক

যে ব্যক্তি ধৈর্যহীন হয়, তার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতি রয়েছে।

  • অভিযোগ ও হতাশায় ডুবে যায়।
  • ছোট বিপদে ভেঙে পড়ে, বড় পরীক্ষায় হেরে যায়।
  • গুনাহ ও হারাম কাজে জড়িয়ে পড়ে।
  • আল্লাহর সাহায্য ও রহমত থেকে বঞ্চিত হয়।

📌 কুরআনে এসেছে:

وَخُلِقَ ٱلْإِنسَـٰنُ عَجُولًۭا

(মানুষকে অস্থির স্বভাবের করে সৃষ্টি করা হয়েছে।) — সূরা আল-আম্বিয়া: ৩৭

অতএব, যে ধৈর্য অর্জন করে না, সে তার স্বাভাবিক দুর্বলতার কারণে ক্ষতির মুখে পড়ে।

উপসংহার: ধৈর্যের সাথে আল্লাহর নৈকট্য

ধৈর্য এমন এক গুণ, যার মাধ্যমে একজন মুমিন সরাসরি আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করে। কুরআনে আল্লাহর প্রতিশ্রুতি—

إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
(নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।)
— সূরা বাকারা: ১৫৩

👉 দুঃখ-কষ্টে ধৈর্য, ইবাদতে স্থিরতা এবং গুনাহ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে একজন বান্দা আল্লাহর ভালোবাসা, সাহায্য ও জান্নাত লাভ করে।

সংক্ষেপে:

  • ধৈর্য হলো ঈমানের অর্ধেক।
  • ধৈর্যশীলরা আল্লাহর বিশেষ সাহায্যপ্রাপ্ত।
  • ধৈর্যহীনতা মানুষকে দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

🌸 তাই মুমিনের জন্য ধৈর্য শুধু একটি গুণ নয়, বরং আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি মহামূল্যবান মাধ্যম।


Share this post
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x