আজল কি? কিভাবে আজল করে বা কি ভাবে করতে হয়? আজল করা কি জায়েজ? একইভাবে গর্ভপ্রতিরোধকারী বিভিন্ন আধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার হুকুম কী ?
الجواب باسم الله عز وجل
আজল কি?
স্ত্রী সহবাসকালে বিশেষ অবস্থায় ( ঘন পানি বাহির হওয়ার আগ মুহূর্তে) স্ত্রী ভেতর থেকে পুরুষাঙ্গ বের করে নেওয়াকে আজল বলে। এর উদ্দেশ্য থাকে বাচ্চা জন্মের উপাদান স্ত্রীর ভেতরে প্রবেশ করতে না দেওয়া। এটি গর্ভপ্রতিরোধকারী একটি ন্যাচারাল উপায়। প্রাচীনকাল থেকে এটি চলে আসছে। কিছু হাদিসে এই শব্দটি সরাসরি ব্যবহার হয়েছে।
শব্দ বিশ্লেষণ
আরবি ( العزل) বা আজল শব্দটির অর্থ হল পৃথক করা বা বিচ্ছিন্ন করা। আরবরা বলে :
عَزَل الشَّيءَ عن غيره
অর্থাৎ সে বস্তুটিকে অন্যকিছু থেকে আলাদা করেছে। এই শব্দটি কোনো বস্তু অপর কোনো বস্তুর সাথে মিলত হওয়া থেকে বিরত রাখা বা বিচ্ছিন্ন করার অর্থে ব্যবহার হয়। পবিত্র কুরআনে এই শব্দ ব্যবহার হয়েছে নিম্নের আয়াতে:
«فاعتزلوا النساء فى المحيض ولا تقربوهن حتى يطهرن»
অর্থঃ অতএব, মাসিক চলাকালে স্ত্রীলোদের সাথে ( সঙ্গম থেকে) বিরত থাক এবং তারা উত্তমরূপে পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তোমরা তাদের নিকটেও যেওনা। (সুরা বাকারা, আয়াত – ২২২)
এই আয়তে আজল শব্দটি ব্যবহার হয়েছে বিরত থাকার অর্থে। আমাদের আলোচ্য বিষয়েও আজল শব্দটি একই অর্থ প্রদান করছে। অর্থাৎ বাচ্চা জন্মের উপাদান বা পুরুষের ঘন পানি স্ত্রী ভেতরে নির্গত করা থেকে বিরত থাকা।
আজল কিভাবে করে?
যে কোনোভাবে আজল পরতে পারেন। এটার জন্য কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। প্রত্যেক ব্যক্তি তার ইচ্ছা, চাহিদা ও সুবিধা অনুযায়ী আজল করতে পারবে। কেবল সে সব অবস্থা শর্ত মানতে হবে যার ভিত্তিতে আজল জায়েজ।
আজল করা কি জায়েজ?
সাধারণভাবে আজল করা জায়েজ। তবে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বিশেষের নিয়ত, অবস্থা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে আজল হারামও হতে পারে। তাই উত্তরটি একটু বিস্তারিত আলোচনার দাবি রাখে। বিষয়টির বিভিন্নদিক পরিষ্কারভাবে বুঝার জন্য নিন্মোক্ত শিরোনামগুলোর অধীনে মাসআলাটি আলোচনা করছি।
- কোনো কারণ ছাড়া এমনিতেই আজল করা।
- প্রয়োজন সাপেক্ষে যেমন স্ত্রীর শারীরিক দূর্বলতার ফলে বাচ্চা নিতে অপারগ অবস্থায় আজল করা।
- বাচ্চা নিলে খাওয়াতে পারবে না এই ভয়ে আজল করা।
কোনো কারণ ছাড়া এমনিতেই আযল করা
সন্তান-সন্ততি আল্লাহ তায়ালার নিয়ামত। মৃত্যুপরও কবর থেকে দোয়া পাওয়ার মাধ্যম হচ্ছে সন্তান-সন্ততি। তাই সন্তান বেশি হলে কবরে যাওয়ার পর তাদের দোয়া দ্বারা বেশি উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া এই উম্মতের সংখ্যা অধিক হওয়াটা কাঙ্খিনীয়। উম্মতের সংখ্যা নিয়ে কিয়ামতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গর্ববোধ করবনে।
যেমন মাকিল ইবনে ইয়াসার বর্ণনা করেন,
”جاء رجل إلى النبى -صلى الله عليه وسلم- فقال إنى أصبت امرأة ذات حسب وجمال وإنها لا تلد أفأتزوجها قال لا( ثم أتاه الثانية فنهاه ثم أتاه الثالثة فقال ) تزوجوا الودود الولود فإنى مكاثر بكم الأمم
‘একজন ব্যক্তি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে বললো, আমি বিবাহের জন্য একজন সম্ভ্রান্ত ও সুন্দরী নারীকে পেয়েছি। কিন্তু সে সন্তান জন্ম দিতে পারবে না। আমি কি তাকে বিবাহ করবো ? তিনি বললেন, ‘না।’ অতপর সে দ্বিতীয়বার আসলো। এবারও তাকে নিষেধ করে দিলেন। অতপর সে তৃতীয়বার আসলো। তখন তিনি বললেন, ‘তোমরা মায়াবতী, অধিক সন্তান জন্মদাত্রী নারী বিয়ে করো। কেননা আমি তোমাদের সংখ্যা আধিক্য নিয়ে অন্যান্য উম্মতের উপর গর্ব করবো।’ (আবু দাউদ : ২০৫২)
এ জন্য প্রত্যেক মুসলিমের জন্য উচিত ও উত্তম হলো কোনো কারণ ছাড়া আজল না করা। তদুপরি কেউ যদি আজল করে, তাহলেও তা জায়েজ হবে।
আজল সম্পর্কিত হাদিস
জাবির রদিয়াল্লাহু অনহু বর্ণনা করেন,
”كنا نعزل على عهد رسول الله -صلى الله عليه وسلم- فبلغ ذلك نبى الله -صلى الله عليه وسلم- فلم ينهنا “
‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে আমরা আযল করতাম। অতপর এই সংবাদ তাঁর কাছে পৌঁছালো। কিন্তু তিনি আমাদের নিষেধ করেননি।’ ( সহিহ মুসলিম : ৩৬৩৪ )
আবু সাইদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
”أن رجلا قال يا رسول الله إن لى جارية وأنا أعزل عنها وأنا أكره أن تحمل وأنا أريد ما يريد الرجال وإن اليهود تحدث أن العزل موءودة الصغرى. قال )كذبت يهود لو أراد الله أن يخلقه ما استطعت أن تصرفه) “
‘একজন ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসুল! আমার একটি বাঁদি রয়েছে। আমি তার সাথে আযল করি। আর আমি পছন্দ করি না সে গর্ভবতী হোক। অথচ পুরুষরা যা চায় আমিও তা চাই। কিন্তু ইয়াহুদিরা বলে, আযল হলো ছোটপ্রকার জীবন্ত দাফন। তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ইয়াহুদিরা মিথ্যা বলেছে। আল্লাহ যদি তাকে সৃষ্টি করার ইচ্ছা করেন তাহলে তুমি তা ফিরাতে সক্ষম হবে না।’ ) ( আবু দাউদ : ২১৭৩)
উল্লেখিত দু’টি হাদিসসহ এ মর্মের আরো বেশ কিছু হাদিস ও আসারকে উলামায়ে কেরাম আজল জায়েয হওয়ার উপর দলিল পেশ করেন। যেমন ইবনু হুমাম বলেন,
العزل جائز عند عامة العلماء ، وكرهه قوم من الصحابة وغيرهم والصحيح الجواز ؛ ففي الصحيحين عن جابر (كنا نعزل والقرآن ينزل) وفي مسلم عنه : (كنا نعزل على عهد
‘অনেক সংখ্যক উলামায়ে কেরামের মতে আযল করা জায়েয আছে। আর সাহাবা ও অন্যদের মধ্য থেকে এক জামাত তা অপছন্দ করেন। তবে বিশুদ্ধ কথা হলো জায়েয। সহিহাইনে জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, ‘কুরআন নাযিলকালে আমরা আজল করতাম।’ আর মুসলিমে আছে, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম এর যুগে আমরা আজল করতাম।’ ( ফাতহুল কাদির : ৭/২৯৩)
আজল পদ্ধতি কতটা নিরাপদ
আজল পদ্ধতি সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। কেননা আজলের ক্ষেত্রে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম বলেছেন ‘আল্লাহ যদি তাকে সৃষ্টি করার ইচ্ছা করেন তাহলে তুমি তা ফিরাতে সক্ষম হবে না।’ অর্থাৎ আজল করার পরও আল্লাহ তায়ালা চাইলে বাচ্ছা জন্ম হবে। সেই পথ খোলা থাকে। তাই আজল বাচ্চা জন্ম হওয়া থেকে বিরত রাখার শতভাগ নিশ্চয়তা দেয় না।
কি ভাবে করতে হয়?
যেভাবে আপনি সুবিধা ও সাচ্ছন্দ লাভ করেন কেবল সেভাবে করলে হবে না। বরং আপনার স্ত্রীর ইচ্ছা ও চাহিদাকে মূল্যায়ন করে করতে হবে। স্ত্রী যদি কোনো কারণে রাজি না থাকেন তাহলে করতে পারবেন না।
কেননা আজল জায়েজ হলেও অবশ্যই কিছু শর্ত মানতে হবে। যদি কোনো একটি শর্ত লঙ্ঘন হয়ে যায় তবে তা আর জায়েজ থাকবে না।
প্রথম শর্ত: সেই পদ্ধতি হতে হবে অস্থায়ী যেমন আজল, কন্ডম, পিল, ইনজেকশন, ইমপ্লান্ট ও প্যাচ ইত্যাদি। কেননা স্থায়ী বন্ধাত্ব গ্রহণ করা হারাম। আজল যার অনুমতি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিয়েছেন সেখানে সন্তান জন্মের পথ চিরতরে বন্ধ হয় না। এ জন্যই তিনি বলেছিলেন আল্লাহ যদি তাকে সৃষ্টি করার ইচ্ছা করেন তাহলে তুমি তা ফিরাতে সক্ষম হবে না। কিন্তু স্থায়ী পদ্ধতিতে গর্ভাশয়ে শুক্রাণু পৌঁছার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার ফলে একজন নারী চিরতরে বন্ধা হয়ে যায়। এভাবে এর মাধ্যমে আল্লাহ তা’য়ালার দেওয়া প্রজনন সক্ষমতার নিয়ামতকে চিরতরে বিনষ্ট করে দেওয়া। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
ومن يبدل نعمة الله من بعد ما جاءته فإن الله شديد العقاب
‘আর আল্লাহ তা’য়ালার নিয়ামত আসার পর কেউ তা পরির্বতন করলে, আল্লাহ তো শাস্তি দানে কঠোর।’
দ্বিতীয় শর্তঃ এমন কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করা যাবে না, যা স্বাস্থ্যঝুকি থেকে মুক্ত নয়। আল্লাহ বলেন,
ولا تقتلوا أنفسكم إن الله كان بكم رحيما
তোমরা নিজে নিজেকে হত্যা করো না। আল্লাহ তোমাদের প্রতি অতিশয় দয়াবান।’
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
(لَا ضَرَرَ وَلَا ضِرَارَ)
‘কারো ক্ষতি করা বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ইসলামে নেই।’ ( মুয়াত্তা মালিক : ২৭৫৮)
তৃতীয় শর্তঃ স্বামী স্ত্রী উভয়ের সন্তুষ্টিতে হতে হবে। কেননা সন্তান নেওয়া বিয়ের মৌলিক একটি উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্যে স্বামী স্ত্রী উভয় সমান অধিকারপ্রাপ্ত। তাই একজনের অনুমতি ছাড়া অন্যজন সন্তান নেওয়া থেকে বিরত থাকা জায়েয হবে না।
উমর ইবনে খাত্তার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত
نهى رسول الله صلى الله عليه و سلم أن يعزل عن الحرة إلا بإذنها
‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বাধীন নারীর অনুমতি ছাড়া তার সাথে আযল করতে নিষেধ করেছেন।’
তাবয়িনুল হাকায়িক গ্রন্থকার বলেন,
”العزل ليس بمكروه برضا امرأته الحرة أو برضا مولى امرأته الأمة“
‘নিজ স্বাধীন স্ত্রীর সন্তুষ্টির ভিত্তিতে বা স্ত্রী বাঁদি হলে তার মনিবের সন্তুষ্টির ভিত্তিতে আজল করা মাকরুহ নয়।’
প্রয়োজন সাপেক্ষে আযল করা
শারীরিক রোগ ব্যাধির ফলে গর্ভে বাচ্ছা নেওয়া কষ্টকর হলে বা আগের সন্তান এখনো বেশ ছোট থাকার কারণে কিংবা বাচ্ছা নিলে মা বা বাচ্ছা মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে ইত্যাদি কারণে সাময়িকভাবে আজল করা বৈধ। বরং এমন অবস্থায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে আজল করা ওয়াজিব। যেমন অবিজ্ঞ ডাক্তার যদি জানিয়ে দেয় গর্ভধারণ করলে বাচ্ছা প্রসবের সময় মায়ের মৃত্যুর প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বা পরপর দু’তিনটি সিজার হওয়ার ফলে অবস্থা এমন হয়েছে যে আর সিজার হলে মাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না, তাহলে আজল করা ওয়াজিব।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
ولا تقتلوا أنفسكم إن الله كان بكم رحيما
‘তোমরা নিজে নিজেকে হত্যা করো না। আল্লাহ তোমাদের প্রতি অতিশয় দয়াবান।’ (সুরা নিসা – ২৯)
অপর আয়াতে বলেন,
ولا تلقوا بأيديكم إلى التهلكة
’আর নিজেদের হাতে নিজেদের ধ্বংসের মুখে পতিত করো না।’ (সুরা বাকারা : ১৪৫)
উল্লেখিত আয়াতদ্বয় ও এ মর্মের হাদিসসহ আরো বেশকিছু দালায়িল রয়েছে যা প্রমাণ করে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য এমন সব কাজ থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব যা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। তাই কোনো নারীর জন্য গর্ভধারণের ফলে মৃত্যুর প্রবল সম্ভাবনা বিদ্যমান থাকলে আজল করা ওয়াজিব। আর এক্ষেত্রে স্থায়ী গর্ভপ্রতিরোধকারী পদ্ধতি গ্রহণ করাও জায়েয হবে বরং তা করাটা অধিক নিরাপধ। কেননা অস্থায়ী পদ্ধতিতে গর্ভ হওয়ার সম্ভাবনা বাকি থাকে। কিন্তু স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণ করে নিলে গর্ভধারণের ন্যূনতম সম্ভাবনা বাকি থাকে না।
দারিদ্র ও রিযিকের ভয়ে আযল করা
কেউ মহান আল্লাহ তায়ালার উপর থেকে আস্থা হারিয়ে, সন্তানের অন্য বস্ত্র বাসস্থান ইত্যাদি দিতে পারবে না ভেবে আজল করলে তা হারাম হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
ولا تقتلوا أولادكم خشية إملاق نحن نرزقهم وإياكم إن قتلهم كان خطئا كبيرا
‘আর তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে দারদ্রি-ভয়ে হত্যা করো না। তাদেরকে আমি রিযিক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ।’
অপর আয়াতে বলেন,
وكذلك زين لكثير من المشركين قتل أولادهم شركاؤهم ليردوهم وليلبسوا عليهم دينهم
‘আর এভাবে তাদের শরীকরা বহু মুশরিকদের দৃষ্টিতে তাদের সন্তানদের হত্যা শোভন করেছে, তাদের ধ্বংস সাধনের জন্য এবং তাদের দীন সম্বন্ধে তাদের বিভ্রান্ত করার জন্য।’
তাছাড়া এরকম ভাবনা ও কাজ মহান আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের অপূর্ণতা থাকার প্রমাণ বহন করে। কেননা আল্লাহ তা’য়ালা সকল মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সকল বস্তু দেওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ মানুষ তার নিজ সামর্থ ব্যয় করে রিযিক বা জীবনের পাথেয় সন্ধান করলে মহান আল্লাহ তাকে তা দিবেন। বাবার রিযিক আলাদা, মায়ের রিযিক আদালা, যতো সন্তান আসবে সকলের রিযিক আলাদা আলাদাভাবে বরাদ্দ করে রেখেছেন। যেমন তিনি বলেন,
وما من دابة في الأرض إلا على الله رزقها
‘পৃথিবীতে বিচরণকারী সবার জীবনের পাথেয় আল্লাহর দায়িত্বে।’
অপর আয়াতে বলেন,
وكأين من دابة لا تحمل رزقها الله يرزقها وإياكم وهو السميع العليم
‘আর এমন কতো জীবজন্তু আছে যারা নিজেদের রিযিক সঞ্চয় করতে পারে না। আল্লাহই রিযিক দান করেন তাদেরকে ও তোমাদেরকে; আর তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
كتب الله مقادير الخلائق قبل أن يخلق السموات والأرض بخمسين ألف سنة
আল্লাহ তা’য়ালা আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবী সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর আগে সৃষ্টিজগতের তাকদির লিপিদ্ধ করেছেন।’
কাজেই সন্তান বেশি হলে তাদের সবাইকে খাবার দিতে বা প্রয়োজন পূর্ণ করতে বাবাকে বেগ পেতে হবে এই ভাবনা থেকে গর্ভপ্রতিরোধকারী ব্যবস্থা গ্রহণ করা কিছুতেই বৈধ হবে না।
الله أعلم بالصواب