সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম । আস্তাগফিরুল্লাহ

শেয়ার করুন

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি। সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম। আস্তাগফিরুল্লাহ। এই তিনটি কালিমা আকারে ছোট, উচ্চারণে সহজ, তবে উপকারীতা ও প্রতিদানের দিক থেকে অতুলনীয়।

এই তিনটি তাসবিহের উপকারীতা, গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে রয়েছ একাধিক সহিহ হাদিস। আপনার দৈনন্দিন রুটিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে এই তাসবিহগুলোকে গ্রহন করতে হাদিসগুলো বেশ অনুপ্রেরণা দেয়।

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি

শব্দ বিশ্লেষণ

এই কামিলায় দুটি অংশ ও তিনটি শব্দ রয়েছে। প্রতিটি অংশ ও শব্দের রয়েছে খণ্ড খণ্ড অর্থ। অতপর সবকটি অংশ মিলে প্রদান করে একটি পরিপূর্ণ অর্থ। প্রতিটি অংশের সম্মিলিত অর্থই হচ্ছে এই তাসবিহের মূল উদ্দেশ্য। তাই পুরো তাসবিহটি গভীরভাবে আত্মস্থ করতে এই দুটি অংশের আলাদা আলাদা অর্থ বুঝা বেশ কার্যকরী উপায়।

দুটি অংশের খন্ডিত অর্থ

প্রথম অংশ – সুবহানাল্লাহি: সুবহান ও আল্লাহ মিলে এই অংশটি ঘটিত। সুবহানাল্লাহ এর আক্ষরিক অর্থ হল – আল্লাহ মহিমান্বিত বা আল্লাহ মহান। অন্যভাবে এর অর্থ হল আল্লাহ সব ধরনের অপূর্ণতা ও মিথ্যা থেকে উর্ধ্বে।

এটি আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা, পবিত্রতা, পরিপূর্ণতা এবং মহত্ত্বের স্বীকৃতি প্রদান করে। তাই আমরা যখন সুবহানাল্লাহ বলি, তখন এ কথার স্বীকৃতি দেই যে, আল্লাহ তায়ালা সর্ব প্রকার অপূর্ণতা ও ত্রুটি থেকে মুক্ত। সেই সাথে তিনি সর্ব প্রকার জাগতিক সীমাবদ্ধতার বাহিরে ও উর্ধ্বে।

দ্বিতীয় অংশ – বিহামদিহি: এ অংশটি ‘হামদ’ শব্দ ও এক বচনবাচক সর্বনাম ‘হা’ মিলে ঘটিত। এই অংশের অর্থ হল – তাঁর প্রশংসা বা তাঁর প্রশংসার সাথে। এই বাক্যাংশটি আল্লাহ তায়ালার প্রশংসাকে আরো স্পষ্ট ও জোড়ালো করেছে। এটি উচ্চারণ করার দ্বারা আমরা সৃষ্টি জগতের উপর আল্লাহর অগণিত রহমত, করুণা এবং অনুগ্রহকে স্বীকার করি।

তৃতীয় অংশ – সুবহানাল্লাহিল আজিম : এই অংশটি তিনটি শব্দ দ্বারা ঘটিত, সুবহান, আল্লাহ ও আজিম। এই অংশটির অর্থও প্রথম অংশের মতোই, এখানে কেবল আল-আজিম বা আল্লাহ সুমহান অংশটি যোগ হয়েছে। এটিও আল্লাহর মহিমা, শক্তি এবং পবিত্রতা তুলে ধরে। এটি আল্লাহকে আল-আজীম বা সর্বমহান হিসাবে বর্ণনা করে এবং সমস্ত সৃষ্টির উপর তাঁর নিরঙ্কুশ সার্বভৌমত্ব এবং কর্তৃত্বের উপর জোর দেয়।

আরবি উচ্চারণ ও অর্থ

এই কালিমাটির মূল আরিব হল –

سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ

উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি।

অনুবাদ: আল্লাহ তায়ালা পবিত্র এবং তারই সকল প্রশংসা।

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি এর ফজিলত সংক্রান্ত হাদিস

قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : إنَّ أَحَبَّ الكَلَامِ إلى اللهِ: سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ (صحيح مسلم – الرقم : 2731

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় কথা হল, সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহ। ( সহিহ মুসলিম : ২৭৩১)

قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : أفضل الكلام ما اصطفى الله لملائكته، أو لعباده: سبحان الله وبحمده. (رواه مسلم)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহর তাঁর ফেরেস্তা বা বান্দাদের জন্য সর্ব উত্তম যে কথা নির্বাচন করেছেন সেটা হল, সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহ ( সহিহ মুসলিম )

عن أبي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم: مَنْ قَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ فِي يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ حُطَّتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি দৈনিক একশ’বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী পাঠ করবে, তার গুনাহসমূহ যদি সমুদ্রের ফেনার মতো বেশি হরেও তা মাফ করে দেয়া হবে। ( সহিহ বুখারি : ৬৪০৫)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( مَنْ قَالَ حِينَ يُصْبِحُ وَحِينَ يُمْسِي سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ مِائَةَ مَرَّةٍ لَمْ يَأْتِ أَحَدٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَفْضَلَ مِمَّا جَاءَ بِهِ إِلَّا أَحَدٌ قَالَ مِثْلَ مَا قَالَ أَوْ زَادَ عَلَيْهِ

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সকলা ও বিকালে যে ব্যক্তি ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি বলবে কিয়ামতের দিন তার মত উত্তম ফল ভোগকারী কেউ হবে না তবে সেই ব্যক্তি ব্যতীক্রম যে তার মত বা তার থেকে বেশি এই তাসবীহ পাঠ করেছে। ( সুহিহ মুসলিম : ২৬৯২)

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম

এই তাসবিহটি সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি এর মতোই। এখানে কেবল দুটি শব্দ বৃদ্ধি হয়েছে, যার ফলে অর্থের মধ্যে দূঢ়তা ও শক্তিমত্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই তাসবিহটির মূল আরবি হল –

سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ الْعَظِيمِ

উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি। সুবহানাল্লাহিল আযীম।

অনুবাদ: আল্লাহ তায়ালা পবিত্র এবং তারই সকল প্রশংসা। পবিত্র আল্লাহ সর্বমহান।

এই তাসবিহদুটি আল্লাহর প্রশংসার একটি শক্তিশালী অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। এর দ্বারা ইসলামের মূল বিশ্বাস তথা একত্ববাদ প্রতিফলিত হয়। আল্লাহ হলেন পরম সত্তা, তিনিই কেবল সকল প্রশংসা, সম্মান এবং উপাসনার যোগ্য।

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম
সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম

হাদিস

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম তাসবিহটি সম্পর্কে সহিহ বুখারিতে একটি প্রশিদ্ধ হাদিস রয়েছে। এ হাদিসটি এই তাসবিহের ফজিলত, উপকারীতা ও তাৎপর্য বুঝতে যথেষ্ট।

عن أبي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم: ( كَلِمَتَانِ خَفِيفَتَانِ عَلَى اللِّسَانِ ثَقِيلَتَانِ فِي الْمِيزَانِ حَبِيبَتَانِ إِلَى الرَّحْمَنِ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ الْعَظِيمِ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দুটি বাক্য রয়েছে, যেগুলো দয়াময় আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়, উচ্চারণে খুবই সহজ (আমলের) পাল্লায় অত্যন্ত ভারী। (বাক্য দু’টি হচ্ছে), সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম, আমরা আল্লাহ তায়ালার প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি, মহান আল্লাহ অতীব পবিত্র। ( সহিহ বুখারি : ৬৬৮২ )

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম । আস্তাগফিরুল্লাহ

আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ হল আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। এই কালিমাটির মূল আরবি হল –

استغفرالله

অর্থ: আমি আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

আস্তাগফিরুল্লাহ এর ফজিলত সংক্রান্ত হাদিস

ইস্তিগফার করার অনেক উপকার ও ফজিল রয়েছে। বহু হাদিস ও কুরআনের আয়াতে এ সংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে। আমরা কেবল একটি হাদিস এখানে আলোচনা করছি।

عنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رضِي اللَّه عنْهُما قَال: قالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: منْ لَزِم الاسْتِغْفَار، جَعَلَ اللَّه لَهُ مِنْ كُلِّ ضِيقٍ مخْرجًا، ومنْ كُلِّ هَمٍّ فَرجًا، وَرَزَقَهُ مِنْ حيْثُ لاَ يَحْتَسِبُ (رواه أبو داود

অনুবাদ: ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ্‌র রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সব সময় ইস্তেগফার করে, আল্লাহ্ তাকে সব রকম অসুবিধা থেকে মুক্তির পথ প্রদর্শন করবেন, সকল প্রকার দুঃচিন্তা দূর করবেন এবং অপ্রত্যাশিত জায়গা থেকে রিজক সরবরাহ করবেন। ( আবু দাউদ)

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি অথবা সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম এই দুটি তাসবিহের সাথে আস্তাগফিরুল্লাহ এর সম্পর্ক নেই। হাদিসে আস্তাগফিরুল্লাহ ও সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি আলাদাভাবে উল্লেখ আছে। তাই আপনি আস্তাগফিরুল্লাহ আলাদাভাবে পড়তে পারেন। এটাকে সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি এর সাথে মিলোনের প্রয়োজন নেই।

তাসবিহগুলোর ফজিলত

  • আল্লাহর প্রিয় হওয়া : সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজীম তাসবীহটি আল্লাহ কাঝে খুবই প্রিয়। আর যে বাক্য আল্লাহর প্রিয় সেই বাক্য উচ্চারণকারীও আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসাবে গণ্য হবে।
  • ওজনে ভারী হওয়া: মানুষের আমল নামা যখন মাপা হবে তখন এই তাসবীহটির ওজন অত্যন্ত বেশি হবে।
  • পাপ মাফ: সমুদ্রের ফেনা সমপরিমাণ পাপ হলেও এই তাসবীহ পাঠ করার দ্বারা সেটা মাফ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • কিয়ামত দিবসে সম্মান: যে ব্যক্তি সকাল ও বিকালে ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন তার মত উত্তম ও সম্মানিত আর কেউ হবে না।
  • আল্লাহর স্মরণ: সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজীম এর মধ্যে আল্লাহর স্মরণ ও তাসবীহ রয়েছে। এগুলি নিয়মিত পাঠ করার মাধ্যমে আমরা তাদের জীবনে আল্লাহর উপস্থিতি এবং মহত্ত্ব সম্পর্কে একটি অবিচ্ছিন্ন সচেতনতা বজায় রাখতে পারি।
  • আধ্যাত্মিক উন্নতি: তাসবীহটি মুমিনের আধ্যাত্মিক অবস্থাকে উন্নত করে। আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধির জন্য এই তাসবীহ অতুলনীয়। এটি আমাদের হৃদয় এবং মনকে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং পাপ পঙ্কিলতা থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
  • মানসিক প্রাশান্তি: এই তাসবীহগুলি নিয়মিত পাঠ মানসিক প্রশান্তি, পেরেশানি ও প্রফুল্ল জীবন যাপনে সাহায্য করে।
  • পুরষ্কার বৃদ্ধি: প্রতিটি ইবাদতের সাথে আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কার রয়েছে। তাই এই তাসবীহগুলো নিয়মিত পাঠ করা শুধু আধ্যাত্মিক উপকারই করে না বরং তা পরকালে অসংখ্য সওয়াব অর্জন করর অনন্য উপায়।
  • অসুবিধায় স্বাচ্ছন্দ্য: বিপদ ও কষ্টের সময়ে আল্লাহর স্মরণ মুমিনদের জন্য সান্ত্বনা ও শক্তির উৎস। চ্যালেঞ্জিং মুহুর্তে এই তাসবীহগুলি পাঠ করা স্বস্তি এবং শক্তি প্রদান করতে করে।

তাসবিহগুলোর তাৎপর্য

আমরা সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি বলার দ্বারা আল্লাহর প্রশংসা, পবিত্রতা, পরিপূর্ণতা এবং মহত্ত্বের স্বীকার করি। এর দ্বারা আমরা এ কথার স্বীকৃতি দেই যে, আল্লাহ তায়ালা সর্ব প্রকার অপূর্ণতা থেকে মুক্ত। এই তাসবীহগুলো প্রকৃত পক্ষ্যে আল্লাহর একত্ববাদকে প্রতিফলিত করে।

ইসলাম ধর্মের মূল তাৎপর্য ও মৌলিকত্ব এই একত্ববাদ এর মধ্যে নিহিত।ইসলাম ব্যতীত অন্য সকল ধর্ম ও মতবাদ আল্লাহর সাথে অন্য উপস্যকে শরীক সাবস্ত্য করে। যেমন খৃষ্ট ধর্ম স্রষ্টাকে তিন সত্তার সম্মিলিতরূপ হিসাবে গ্রহণ করেছে। ইয়াহুদিরা আল্লাহর সাথে প্রতিনিয়ত হঠকারিতা করেছে। মক্কার মুশরিকরা আল্লাহর সাথে প্রতিমাকে খোদা মেনেছে।

বস্তুত আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা মানে হল আল্লাহ তায়াল তার ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, শ্রেষ্টত্ব ইত্যাদি ক্ষেত্রে অপূর্ণাঙ্গ। কাজেই আমরা সুবহানাল্লাহ বা আল্লাহ পবিত্র বলার দ্বারা তার তার সাথে অন্য কারো অংশীদারিত্ব অস্বীকার করছি।

এই তাসবিগুলো কখন ও কীভাবে পাঠ করবেন?

সকাল ও সন্ধ্যায় এই তাসবিগুলো পাঠ করা উত্তম। কেননা হাদিসে সকাল সন্ধ্যায় ১০০ বার এই তাসবীহগুলো পাঠ করার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কেবল যে এই সময়ে পাঠ করতে হবে তা নয় বরং যে কোনো সময় সেটা পাঠ করতে পারবেন। আর ১০০ বার পাঠ করার কথা হাদিসে উল্লেখ আছে, তাই ১০০ বার পাঠ করলে হাদিসে বর্ণিত উপকার লাভ করতে পারবেন। তবে ১০০ বার পাঠ করতে না পারলেও যতবার সম্ভব ও ইচ্ছা ততবার পাঠ করতে পারবেন।

বাস্তবিক প্রয়োগ

প্রতিদিনের সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি ও সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম, তাসবীহগুলো পাঠ করার সাথে রয়েছে আমাদের জীবনের গভীর বন্ধন। তাই এটিকে দৈনন্দিন রুটিনে কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায় সে সম্পর্কে এখানে কিছু পরামর্শ রয়েছে:

সকাল ও সন্ধ্যার যিকর: এই বাক্যটি পাঠ করে আল্লাহর যিকরের মাধ্যমে আপনার দিন শুরু ও শেষ করতে পারেন ফজরের নামাজের পরে এটি পাঠ করুন। একইভাবে, মাগরিবের সালাতের পরে বা ঘুমানোর আগে এটি পাঠ করা যাবে। এই যিকরটিকে আল্লাহর প্রশংসা এবং কৃতজ্ঞতার সাথে আপনার দিন শুরু এবং শেষ করার উপকরণ হিসাবে গ্রহণ করতে পারেন।

যাতায়াতের সময় : যাতায়াতের সময়, লাইনে অপেক্ষা করা অবস্থায় এই যিকর পাঠ করার জন্য সেরা একটি সময়। এভাবে অফিসে বা কর্মস্থলে বিরতির সময় নির্জনতার মুহূর্তগুলো সাথী হিসাবে এসব যিকরকে গ্রহণ করতে পারেন।

নামাজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করুন: আপনার প্রতিদিনের সুন্নাহ বা নফল নামাজ শেষ করার পরে বা সুজূদ এর সময় এই জিকরগুলো পাঠ করতে পারেন। শব্দগুলোর অর্থ উচ্চারণ করার সময় অর্থের প্রতি মনযোগী হয়ে বাক্যেগুলোর সাথে আধ্যাত্মিক সংযোগ আরও গভীর করুন।

পারিবারিক বা সামাজিক জামায়েত: জমায়েত বা খাবারের সময় পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের একসাথে এ সব জিকর পাঠের উপকার নিয়ে আলোচনা করুন। তা অনেকের মধ্যে এটি পাঠর আগ্রহ জাগ্রত করবে। পরিবার বা সমাজে বিশ্বাসের বন্ধন শক্তিশালী করবে।


শেয়ার করুন

Leave a Comment