বিটিএস কি হারাম? BTS কি মুসলিম? সত্য জানুন এবং উপলব্ধি করুন

শেয়ার করুন

বর্তমান সময়ের একটি আলোচিত নাম হল – BTS। অনেকে জেনে আবার অনেকে না জেনে বিটিএস ভক্ত হয়। তদুপরি সাধুবাদ তাদের জন্য যারা এটা জানতে চায় যে বিটিএস কি হারাম? কেন হারাম? BTS কি মুসলিম? আমরা আশা করি এই পোস্টে সত্য জেনে আমাদের ভাই ও বোনেরা তাদের চিন্তা ও কর্মে পরিবর্তন আনবেন?

এই পোস্টে আমি বিটিএস সম্পর্কে আপনার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব। আপনি যদি এই বিষয়ে যুক্তিপূর্ণ জ্ঞানলাভ করতে চান তবে আপনার এই পোস্টটি ভালোভাবে পড়া উচিত; আপনি যদি এর বিরুদ্ধে হন, তাহলে এই পোস্টটি এড়িয়ে যেতে পারেন।

ইসলামিক দৃষ্টিকোণে বিটিএস এবং এর কার্যক্রম নিয়ে আমরা এই পোস্টে আলোচনা করার চেষ্টা করব। আমরা মনে করি এই পোস্টে কেউ আপত্তি করবে না।

বিটিএস কি?

বিটিএস দক্ষিণ কোরিয়ান একটি পপ ব্র্যান্ড। তারা সাধারণত নানান ধরণের পপ গান তৈরি এবং গান পরিচালনা করে। তাদের অদ্ভুদ আচরণ ও বেশভূষার কারণে তারা বিশ্বব্যাপী আলোচিত ও সমালোচিত।

উদ্বেগের বিষয় হল অনেক মুসলিম যুবক বিটিএসের বড় ভক্ত। বিশেষ করে বাংলাদেশী মেয়েরা বিটিএসের এমন গোড়া ভক্ত যে, তাদের সামনে বিটিএসের সমালোচনা মোটেও সহ্য করতে পারে না। এমনকি কুরআন ও হাদিসের বাণী শোনেও তাদের সেই ভক্তিতে তারা নমনীয় হতে চায় না।

বিটিএস কি হারাম?

হ্যাঁ, বিটিএস হারাম। বিশ্বের সকল ইসলামী চিন্তাবিদ এ বিষয়ে একমত। বিটিএস মুসলিম তরুণ ও তরুণীদের ঈমান নষ্ট করার ষড়যন্ত্র লিপ্ত। যারা বিটিএস সমর্থন করে তারাও তাদের পাপের অংশীদার। এখানে আমরা বিটিএস দ্বারা এই ব্রান্ডের সদস্যদের কর্মকাণ্ড উদ্দেশ্য নিয়েছি। আক্ষরিক অর্থে বিটিএস ব্রান্ড নয়।

বিটিএস সদস্যরা তাদের প্রতিটি কন্টেন্টে আজগুবি সাজগুজ করে মানুষের সামনে নিজেদের প্রকাশ করে। তাদের গানগুলোও হয় অদ্ভুত রকম, ভালো কোনো মর্ম নেই, উপকারী কিছু নেই। তাদের ডান্সগুলো অশালীন ও অঙ্গভঙ্গি কুরুচিপূর্ণ।

সেই সাথে বিটিএসের প্রতিটি কন্টেন্টে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার থাকে। ডান্স থাকে, ছেলে ও মেয়ের মিশ্রণ থাকে। থাকে হারাম কন্ঠ। তাই বিটিএস হারাম। কেউ যদি এটাকে হালাল মনে করে তাহলে তা হবে কুফর।

কেন বিটিএস হারাম?

বিটিএস নিষিদ্ধ হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে।

  • ইসলাম বাদ্যযন্ত্র বাজানো নিষিদ্ধ করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ান এই বয় ব্যান্ড বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করে মানুষকে বিনোদন দেয়। তাই তাদের গান ও কন্টেন্ট হারাম।
  • ইসলামে নাচ হারাম। অথচ বিটিএস গ্রুপ মানুষকে হারামের দিকে নিয়ে যাচ্ছে গান গেয়ে, নাচ করে এবং ছেলে-মেয়েদের হারাম কাজে আকৃষ্ট করে।
  • বিটিএস মুসলিম সমাজকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে। তারা তরুণদের অদ্ভুত পোশাক ও লাইফস্টাইলের দিকে আকৃষ্ট করছে। তাদের এই চালচলন সম্পূর্ণ সুন্নাহ পরিপন্থী। ইসলাম এ সব রং ঢং করা এবং ছেঁড়া কাপড় পরিধান, অবান্তর ও অদ্ভুত আচরণ সমর্থন করে না।
  • ইলুমিনাতির সাথে বিটিএসের সম্পর্ক রয়েছে। অনেক প্রোগ্রাম ইলুমিনাতির সিম্বল তারা প্রচার করার চেষ্টা করেছে। ইলুমিনাতি দাজ্জালের বাহিনী। মুসলিমরা কখনই ইলুমিনাতিদের সমর্থন করতে পারে না। তাই BTS হারাম।

BTS সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

একজন মুসলিম বিটিএসের ভক্ত হওয়া মানে তার বিশ্বাস ও ঈমানের সাথে সর্বদা ভন্ডামি করা। কারণ আপনি সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, আল্লাহই একমাত্র উপাস্য। তাঁর দেওয়া জীবন বিধানই আপনার চূড়ান্ত পথ ও পাথেয়। অথচ আপনি বিটিএস সমর্থন করার দ্বারা ঠিক এর উল্টো দিকটা সমর্থন করছেন। যারা আপনার ইহ ও পরাকলীন জীবনের জন্য সামান্যতম উপকার করছেনা।

তাই একবার নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করুন, তখন আপনি নিজেই সম্মত হবেন যে, বিটিএস ফ্যান হওয়া বা বিটিএস সমর্থন করা হারাম। আপনি বুঝতে পারবেন যে, যারা বিটিএসের গান পছন্দ করেন বা সমর্থন করেন তারা প্রকৃত পক্ষে পাপ করছেন, যার খেসারত তারা মৃত্যুর পর দিতে হবে।

অনেক বিটিএস ভক্ত বিভিন্ন জোর দিয় জিজ্ঞাসা বলেন যে, আমি সম্পূর্ণ ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন একজন ব্যক্তি এবং ইসলামের সমস্ত নিয়ম-কানুন মেনে চলি। অন্যদিকে, আমি বিটিএসের সকল কার্যক্রমকে সমর্থন করি।

সেক্ষেত্রে আপনার প্রশ্নের উত্তর হবে, এই পৃথিবীতে অনেক মানুষ সব ধরনের ইবাদত করেও ছোটখাটো ভুলের কারণে বা অজান্তে বিভিন্ন ত্রুটির কারণে জাহান্নামে যাবে। আপনি যদি জেনেশুনে কোন হারাম কাজে লিপ্ত হন বা হারাম কাজকে সমর্থন করেন, তাহলে সেখানে জান্নাত পাবেন কিভাবে?

আমরা যদি স্বাভাবিক ও সুষ্ঠু দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করি, তাহলে আমরা বুঝতে পারি যে, বিটিএস-এর সকল কার্যক্রম ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে হারাম। তাই আপনি যদি এটা জানার পরও তাদের পরিত্যাগ করেন না, তাহলে আপনিও তাদের গুনাহের অংশীদার হবেন।

BTS কি মুসলিম

না, bts মুসলিম নয়। মূলত bts একটি বয় ব্যান্ড। এটি মুসলিম হওয়ার প্রশ্নই আসে না। আর যদি বিটিএসের ৭ সদস্য সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। তারা মুসলিম কি না সেটা জানতে চান তাহলে এই উত্তরটিও না বাচক। কেননা এ ৭ সদস্যের এই ব্যান্ড তাদের কোনো ধর্মীয় পরিচিয় প্রকাশ করেনি। তাছাড়া তাদের আচরণ ও লাইফস্টাই এটা পরিষ্কারভাবে জানান দেয় যে তারা মুসলিম নয়। এর বিপরীত তারা পৃথিবীব্যাপি শয়তানের কর্মকাণ্ড প্রচার ও প্রসার করছে।

BTS, Bangtan Boys নামেও পরিচিত। তারা বিগ হিট এন্টারটেইনমেন্ট দ্বারা গঠিত। বিটিএসের সদস্যরা হলেন জিন, সুগা, জে-হোপ, আরএম, জিমিন, ভি এবং জাংকুক। তারা দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন পটভূমি থেকে এসেছেন এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও অনুশীলন অনুসরণ করেন।তাদের কোনো সদস্য মুসলিম কিনা তা নির্দেশ করে এমন কোনো সাধারণ তথ্য নেই। গোষ্ঠীটির ফোকাস মূলত ধর্মীয় অনুষঙ্গের পরিবর্তে সঙ্গীত, পারফরম্যান্স এবং তাদের শৈল্পিক প্রচেষ্টার উপর।

সারসংক্ষেপ

বিটিএস হারাম। এটা ইসলামী পন্ডিতদের ঐকমত্য। কারণ এটি পবিত্র কোরআন ও হাদিসের নির্দেশনার পরিপন্থী, বিএসসি অনুসরণকারী মুসলিম যুবক-যুবতীরা স্বাভাবিকভাবেই একটি হারাম কাজে লিপ্ত।

কিন্তু তারা যদি বিটিএসকে হালাল মনে করে তবে তা কুফর। বিটিএস তার সমগ্র কার্যক্রম জুড়ে বিশ্বব্যাপী ইসলাম বিরোধী মূল্যবোধ, আদর্শ ও সংস্কৃতি প্রচার করে। তারা মানুষকে একটি অদ্ভুত জীবনধারার দিকে ডাকে, যা মানব সভ্যতায় কখনও বিদ্যমান ছিল না এবং সেটা মানুষের জন্য কখনই উপকারী নয়।

তাই মুসলিম যুবকরা – যারা বিটিএস-এর অনুসারী, তারা কুরআন ও হাদিসের নির্দেশনা মেনে এবং বিটিএস ত্যাগ করে তাদের ধর্মের পথে ফিরে আসা সবচেয়ে উত্তম উপায়।


শেয়ার করুন

Leave a Comment